বিনোদন
শত ব্যস্ততার মাঝেও রিহানা তাঁর জীবনের প্রথম প্রায়োরিটি। মেয়ে অভিনয় করুক সত্যিই কি চান লাভলি?

কন্যাকে নিয়ে অভিনেত্রী লাভলি মৈত্রছবি: সংগৃহীত
Authored By:
Published on
:
3 min read
অভিনয়, রাজনীতির ময়দান, সংসার থেকে সন্তান। অভিনেত্রী লাভলি মৈত্র জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপই হাসিমুখে সামলে চলেছেন। তাঁর একমাত্র কন্যা রিহানার বয়স এখন সবে সাত। স্কুলজীবন শুরু হলেও তার এখন সবচেয়ে ভালো বন্ধু মা। সন্তানকে প্রথমবার কোলে পাওয়ার সেই মুহূর্ত ভাগ করে অভিনেত্রী বললেন, ‘আমার মনে হয়, প্রতিটা মায়ের জীবনের এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং আনন্দের মুহূর্ত। আমাকে যদি কেউ কখনও জিজ্ঞেস করে যে তুমি লাইফে কী অ্যাচিভ করেছো, আমি হাসিমুখে বলব একটা মানুষকে সৃষ্টি করেছি।’
পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ, টেনিস খেলা ও ড্রয়িং সবচেয়ে প্রিয় রিহানার। মেয়ের যখন মাত্র দেড় বছর বয়স, তখন আবারও ধারাবাহিকের কাজ শুরু করেন লাভলি। আর বছর আড়াইয়ে প্রথমবার ভোটে দাঁড়ান তিনি। বর্তমানে ‘চিরসখা’ ধারাবাহিকেও দেখা যাচ্ছে অভিনেত্রীকে। লাভলির কথায়, তাঁর শত ব্যস্ততায়ও নাকি সমানভাবে অ্যাডজাস্ট করেছে একরত্তি মেয়ে।
অভিনেত্রীর কথায়, ‘আসলে ও ছোটবেলা থেকেই খুব অ্যাডজাস্ট করতে জানে। এবং এর কোনও ক্রেডিট আমার নয়। বরং, সম্পূর্ণ কৃতিত্ব ওর। আমি অনেকের থেকেই শুনেছি যে গোটা রাত বাচ্চা জেগে থাকে বা কান্নাকাটি করে। রিহানা এমনটা কখনও করেনি। খাওয়া, ঘুম সবটা ছোট থেকেই সময় মতো করে ও। তার পরেও যখন থেকে ওকে রেখে আমি বাইরে বেরতে শুরু করেছি, কখনও আমায় কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়নি ওর জন্য। অনেক ছোট থেকেই নিজের কাজ নিজে করা, নিজের হাতে খাওয়া সবটা করে। এটা বোধহয় ঈশ্বরেই আশীর্বাদ।’
সপরিবারে লাভলি মৈত্রছবি: সংগৃহীত
তবে মাকে টেলিভিশনের পর্দায় দেখে ভীষণই গর্বিত একরত্তি। বন্ধুরা মায়ের প্রশংসা করলে তো আর কোনও কথাই নেই। লাভলির সিরিয়ালের প্রতিদিনের দর্শক নাকি তাঁর কন্যা। মাঝে মাঝে আবার মায়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাজতেও পছন্দ করে সে। একই শেডের লিপস্টিক থেকে ম্যাচিং ড্রেস, মায়ের মতো সাজতে হবে এটাই রিহানার একমাত্র লক্ষ্য। অভিনেত্রীর কথায়, ‘সত্যি বলতে ও আমায় মা কম, বন্ধুই ভাবে বেশি।’
লাভলির স্বামী সৌম্য রায় পেশায় একজন আইপিএস অফিসার। তাই কর্মসূত্রে তিনিও ভীষণই ব্যস্ত। তিনজনে একসঙ্গে সময় কাটানোটা খানিক সমস্যার হয়ে দাঁড়ায়। লাভলি বলেন, ‘কঠিন হলেও আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করি অ্যাডজাস্ট করার। কোনও দিন আমার শুটিংয়ের জন্য ফিরতে দেরি হলে, সৌম্য তাড়াতাড়ি চলে আসে এবং যতটা পারে সময় দেওয়ার চেষ্টা করে মেয়েকে। অন্যদিকে আমার ক্ষেত্রেও তাই। আর মেয়ে সৌম্যকে একটু ভয় পায় ঠিকই, কিন্তু বাবা অন্ত প্রাণ। আসলে মেয়েদের তো সবসময়ই বাবার প্রতি টান একটু বেশি থাকে।’
ছুটির মুডে সপরিবারে লাভলি মৈত্রছবি: সংগৃহীত
মেয়েও যদি অভিনয়কেই পেশা হিসেবে বেছে নিতে চান, তবে কি আপত্তি থাকবে লাভলির? অভিনেত্রীর কথায়, ‘যে কাজটা করতে আমি এতটা ভালোবাসি, সেটাই যদি আমার সন্তান করে বা আমার থেকেও বেটার কিছু করে, এর থেকে আনন্দের আর কী হতে পারে। আমরা ওর উপর কোনও কিছু জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতি নই। একইসঙ্গে সময়মতো ওকে জীবনের খারাপ, ভালো দিকটাও বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। তবে জীবনটা ওর, সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারও ওর সম্পূর্ণ রয়েছে।’
মেয়ে খুব ভালো মনের মানুষ হোক এটাই তাঁর একমাত্র চাওয়া। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইপিএস যা-ই হতে চাক না কেন, কোনও কিছুই ম্যাটার করে না তাঁর কাছে। লাভলির কথায়, ‘সন্তান নিজের পায়ে দাঁড়াক এতটুকুই চাওয়া। নিজের পরিশ্রমে পরিচয় তৈরি করুক। আসলে যতক্ষণ না কোনও মেয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াবে, সমাজও তাঁকে অনেকটা পিছিয়ে রাখে। আমরা যে স্ট্রাগলটা নিজেদের জীবনে করেছি, আমি চাই আমার মেয়েও সেটা করেই নিজের যোগ্য জায়গা অর্জন করুক।’
bengali actress
লাভলি মৈত্র
Lovely Maitra
Related Stories
No stories found.